জীবন পরিবর্তন করে দেয়া ১২টি বই

জীবন পরিবর্তন করা বই

জ্ঞানই শক্তি। আর বই হলো জ্ঞানের ভান্ডার।  অসংখ্য বই জীবনে প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিলো। একইভাবে অনেক বই জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করেছে যা কখনো ফিরে আসার নয়। তাই আপনার সময় ও অন্যান্য সুবিধার কথা মাথায় রেখে এখানে আমার পঠিত সবচেয়ে প্রিয় ১২টি বইয়ের পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে, যা আপনার জীবন বদলে ভূমিকা রাখতে পারে।

জীবনীগ্রন্থ

দ্য সেভেন স্টোরি১. দ্য সেভেন স্টোরি মাউনটেইন (The Seven Storey Mountain)

থমাস মের্টন

থমাস মের্টন একজন ধর্মপ্রচারক না হয়েও আধুনিক ক্যাথোলিসিজমে তিনি খুবই প্রভাবশালী একজন ব্যক্তিত্ব। তার আত্মজীবনী পড়তে গিয়ে প্রথমদিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলেও বইটি ফেলে রাখতে পারলাম না।  লক্ষ্যণীয় বিষয় যে, আমার নিজের জীবনের অনেক বিষয়ের সঙ্গে তার সাদৃশ্য রয়েছে।  ফলে, গভীরভাবে তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হলো।
বইটি ছিলো খুবই প্রভাবশালী। ইতোমধ্যে, কোনো ধর্মযাজকের গল্প পড়তে গিয়ে কখনো এধরণের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়নি।  বইয়ের লেখকও ক্যাথোলিসিজমে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, যা সত্যিই আমার মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো।  বইটি তার শৈশবকাল থেকে রোমান ক্যাথোলিক চার্চের সদস্যভুক্ত হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে রচিত।

প্রধান আলোচ্য বিষয়:
সৃষ্টিকর্তার কাছে যথা সময়ে আমাদেরকে পাড়ি দিতে হবে।  তিনি আমাদের মধ্যে স্বতন্ত্র জীবনযাপনে পরিচালনা করেন কিন্তু সবকিছুর উদ্দেশ্য হলো তার মহিমা প্রকাশ করা।  বিশ্বস্ত জীবনের জন্য সঠিক পদ্ধতির প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায়, সহজে তা “সঠিক পথ” থেকে বিপথে পরিচালিত হতে পারে।

ব্রাদার ফ্রান্সিস২. ব্রাদার ফ্রান্সিস অব অ্যাসিসি (Brother Francis of Assisi) 

এফআর. ইগনাচিও ল্যারানাগা

সকল বিশ্বাসীদের কাছে সেন্ট ফ্রান্সিস একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।  যে কোনো সময় যে কেউ গসপেল ত্যাগ করতে পারেন।  এ নিয়ে যিশু ভবিষ্যদ্বাণীও করেছিলেন।  ফ্রান্সিস সেইসব মনীষীদের একজন যিনি তার পরিম-লের লোকদের কাছে যিশুর মতো জীবনযাপন করেছিলেন বলে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।
এই আকর্ষণীয় ধর্মযাজকের আত্মজীবনীটি দৃষ্টিভঙ্গীর দিক থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।  এটি নিশ্চিত করে বলা যায় যে, আমার এই প্রিয় বইটি পড়তে গেলে আপনি ফ্রান্সিসের আধ্যাত্মিক জীবনের গভীরে প্রবেশ করতে পারবেন।  তাছাড়াও এটি আপনার জীবন পদ্ধতিতে বিশেষ পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

প্রধান আলোচ্য বিষয়:
একজন খ্রিস্টান হওয়া মানে প্রার্থনা ও সেবাপ্রদানের মাধ্যমে যিশু ক্রিস্টের সঙ্গে গভীর আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।  সবকিছুই তার প্রেরণায় এগিয়ে যায়।  মূলত ফ্রান্সিসের জীবনীগ্রন্থটি আপনার জীবনের অন্তর্মূলে প্রবেশ করতে অনুপ্রাণিত করবে।

দ্য স্টোরি অব এ সোল৩. দ্য স্টোরি অব এ সোল (The Story of a Soul) 

সেন্ট থেরেসি লিসিঅক্স

একজন ধর্মযাজকের জীবনীগ্রন্থ হিসেবে সর্বপ্রথম আমি এই বইটি পড়েছিলাম।  এছিলো আমার জন্য খুবই চমকপ্রদ মুহূর্ত।  এক কথায় এটি ছিলো অসাধারণ!  তিনি ‘দ্য লিটল ফ্লাওয়ার’ হিসেবে সুপরিচিত।  যদিও তার জীবন আমাদের জীবনের চেয়ে অনেক বেশি আলাদা।  তবুও তিনি বইটিতে নিজেকে খুবই সহজ-সরল ও বিনয়ী বলে উপস্থাপনা করেছেন, যা আপনাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করবে।
এই বিদূষী জীবনে সীমাহীন ক্ষতি, একাকিত্ব, তিতিক্ষা, অসুস্থতা, ভোগান্তি ও নির্বাসিত হওয়ার অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন।  কিন্তু এসব বিষয় মোকাবেলায় তিনি প্রতিমুহূর্তে যিশু ক্রিস্টের উপর আস্থা রেখেছিলেন।  তিনি ও তার বোন উভয়ে কার্মেলিট নান (রোমান ক্যাথোলিক ধর্মীয় বিধি অনুসারী গোষ্ঠী) হিসেবে জীবন অতিবাহিত করেছেন।  থেরেসে গির্জার একজন ডাক্তার হওয়ার পরও একই ধরণের জীবনযাপন করতেন।  সম্প্রতি বিবাহিত দম্পতির মধ্যে তার পিতামাতা সরকারিভাবে সর্বপ্রথম ধর্মযাজক হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।

মূল্য আলোচ্য বিষয়:
পবিত্রতা মানে আপনাকে বিশাল ও বিস্ময়কর কিছু করতে হবে এমন কিছু নয়।  বস্তুত এটি তেমন কোনো জটিল বিষয়ও নয়। বরং তা সচেতনভাবে নিজের মধ্যকার অপরিসীম ভালোবাসা থেকে সৃষ্টি হয়।  এই বোধ পবিত্রতা নিয়ে গড়ে উঠা এবং সৃষ্টিকর্তার ভালোবাসা ও তার উপস্থিতি অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে আমাদেরকে সহায়তা করে।

বিখ্যাত বাক্তিদের জীবনী, স্মৃতিচারণ ও সাক্ষাৎকার বিষয়ক বই পেতে ক্লিক করুন

Rebuilt৪. রিবিল্ড (Rebuilt) 

টম করকোরাম ও এফআর. মাইকেল হুয়াইট

এই বইয়ে টম ও মাইকেল কিভাবে তাদের রাজ্যের একটি গ্রামকে (ক্রিস্টিয়ান ধর্মমতে, ‘পারিশ’ হলো গির্জার অধীন ছ্ট্টো একটি প্রশাসনিক অঞ্চল) সুবিধাভোগীদের (কনজ্যুমার) এলাকা থেকে মুক্ত করে সহকর্মীদের অঞ্চলে পরিণত করেছিলেন তা ফুটিয়ে তুলেছেন।
গতানুগতিক কর্মকা- সবসময় সুফল নিয়ে আসে না — এই অনুধাবনের মধ্যদিয়ে তাদের গল্প শুরু হয়।  যেহেতু, তারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন না, সুতরাং তাদের বিকাশও স্থবির হয়ে পড়ে।  একসময় তারা লক্ষ্য করলো যে, গির্জাগুলো বিকশিত হচ্ছে।  বস্তুত, তারা শেখার উদ্দেশ্যে কয়েকটি সম্ভাবনাময়ী নন-ক্যাথোলিক গির্জা পরিদর্শন করলেন।  তাদের অর্জিত জ্ঞানসমূহ নিজেদের গ্রামে প্রয়োগ করা শুরু করে এবং কতিপয় পরিবর্তনও দেখা দেয়।  পরবর্তীতে গ্রামটিতে সম্পূর্ণভাবে রূপান্তর ঘটে।  এই গল্প নিয়ে বইটি রচিত।

প্রধান আলোচ্য বিষয়:
যিশু খ্রিস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে ক্যাথোলিকদের খুবই সিরিয়াস হওয়া প্রয়োজন, যা গ্রাম (পারিশ) থেকে শুরু হতে হবে।  এখানেই ব্যর্থতা মানে সবখানেই ব্যর্থতা।  আমাদের নিজেদের সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের জীবনে সৃষ্টিকর্তার মহত্বের শক্তির সম্মিলন ঘটাতে আমাদের বাস্তবিক জীবনের কর্মকা-, বিভিন্ন উদ্যোগ ও কৌশলগত সিদ্ধান্তসমূহ ঢেলে সাজাতে হবে।

ধর্মতত্ত্ব

ইভানগেলিক্যাল ক্যাথোলিসিজম৫. ইভানগেলিক্যাল ক্যাথোলিসিজম (Evangelical Catholicism) 

জর্জ ওয়েইগেল

‘অ্যাক্টস অব দ্য অ্যাপোসটলস’ গ্রন্থটি আমার একাধিকবার পড়া হয়েছে।  প্রতিবারই আদি ও আধুনিক গির্জার মধ্যকার ধরণের পার্থক্য বুঝতে দ্বিধায় পড়তে হয়েছে।  আমার পক্ষে পরিবর্তনগুলো না বুঝে পড়া অসম্ভব ব্যাপার।
সময় আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে মনে হওয়ায় প্রায় সময় আমরা এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলি।  কাউকে না কাউকে এই গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গীর বিপরীত ¯্রােতে চলতে হবে।  অন্যথায়, পরিবর্তন আনা সম্ভবই নয়।  এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচ্য বইটি নির্দেশিকা হিসেবে ভূমিকা রাখবে।  ক্যাথোলিক গির্জা কেমন হওয়া উচিত — বইটি এবিষয়ে শক্তিশালী যুক্তি উপস্থাপন করবে।

মূল আলোচ্য বিষয়:
পরিবর্তন ও রূপান্তরের মধ্যদিয়ে গির্জাগুলো এগিয়ে যাচ্ছে।  যদি আমরা গির্জাগুলোর বর্তমান অবস্থার চেয়ে আরো ভালোভাবে এই প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখতে চাই তাহলে আমাদের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে।  বইটি এক্ষেত্রে একটি নির্দেশিকা হিসেবে ভূমিকা রাখবে।

মেয়ার ক্রিস্টিয়ানিটি৬. মেয়ার ক্রিস্টিয়ানিটি (Mere Christianity) 

সি. এস. লুইস

ক্রিস্টিয়ান মতবাদের ব্যাখ্যাসম্বলিত সহজপাঠ্য, চমৎকার-বিশ্লেষিত, মেদহীন স্বচ্ছ বই পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর।  ক্রিস্টিয়ান ধর্মের অনুসারী বা খ্রিস্টান হওয়া মানে কি— এ বিষয়টি সম্পর্কে যথাযথভাবে বুঝার জন্য সি. এস. লুইস-এর মিয়ার ক্রিস্টিয়ানিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বই।  লেখক বিশ্বাসের খুবই গভীরে প্রবেশ করেছেন যা স্বল্প লেখকের পক্ষে সম্ভব।  বইটিতে প্রাকৃতিক আইন ও নৈতিকতা বিষয়ে তার অর্ন্তদৃষ্টি অসাধারণ।

মূল আলোচ্য বিষয়:
একজন ক্রিস্টধর্মের অনুসারী হওয়া মানে কেবল রবিবারে গির্জায় গমন করা নয়।  বরং এর চেয়ে অতিরিক্ত ভিন্ন কিছু বুঝায়। এর অর্থ হলো পার্থিব দৈনন্দিন কর্মকা- থেকে নিজেকে মুক্ত রেখে সৃষ্টিকর্তার প্রতি সম্পূর্ণভাবে নিবেদিত হওয়া।

যেশাস শক৭. যেশাস শক (Jesus Shock) 

ড. পিটার ক্রীফ্ট

যদি আপনি পিটার ক্রীফ্ট সম্পর্কে না জানেন তাহলে আপনি বিশেষ কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।  তিনি অসাধারণ একজন আধুনিক দার্শনিক।  বিশ্বের প্রায় সব বিষয়ই দার্শনিক ও ধর্মতাত্ত্বিকভাবে সত্যের গভীরে যেয়ে অভাবনীয় শৈল্পিক দৃষ্টিকোণ নিয়ে তিনি ব্যাখ্যা করতে পারেন।
এই ছোট্ট বইটি যিশু খ্রিস্টের কর্মকা-ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে লিখিত। বাইবেলে বর্ণিত যিশু খ্রিস্টের সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে লোকজন কিভাবে পরিবর্তিত হলো —এবিষয় নিয়ে তিনি বইটি লিখেছেন। তাদের প্রতিক্রিয়াগুলো ছিলো প্রায় ক্ষেত্রে ‘বিস্ময়কর’ ও আশ্চর্যজনক।  বর্তমানে আমাদের মধ্যকার সমস্যাটা হলো উপলব্ধির অভাব, যাকে ক্রীফ্ট ‘জেশাস শক’ বলে উল্লেখ করেছেন।  এই গল্পটি আমরা অনেকবার শুনেছি।  গল্পে ওইসব ব্যক্তিরা কদাচিৎ তাকে অনুসরণ করতো। লেখক বইয়ে কথোপকথনের মাধ্যমে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া যিশু ক্রিস্টের শক্তিশালী দিকগুলো পাঠকদের কাছে উন্মোচন করেছেন, যা আমাদের বিশ্বাসের মধ্যে নতুন ধারণার।

মূল আলোচ্য বিষয়:
যদি আমরা যিশু ক্রিস্টকে রেডিকেল তথা আমূল পরিবর্তনবাদী, রূপান্তরবাদী, শোকবাদী (শকিং) হিসেবে খুঁজে না পাই তাহলে প্রকৃত যিশুর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাত ঘটেনি।যিশু ক্রিস্টের সঙ্গে ব্যক্তিগত কথোপকথন জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং আমাদেরকে বিশ্বাসের দিকে ধাবিত করে।

ধর্মীয় বিষয়ক সকল বই পেতে ক্লিক করুন

নো গ্রেটার লাভ৮. নো গ্রেটার লাভ (No Greater Love)

সেন্ট থেরেসা অব ক্যালকাটা

প্রত্যেকেই মাদার তেরেসা সম্পর্কে জানেন।  কিন্তু খুব কম  লোকই তার লেখালেখির সঙ্গে পরিচিত।  আলোচ্য বইটি তার জীবনের মতোই সহজ ও গভীর।  মূলত বইটি পড়া শুরু করে শেষ না করা পর্যন্ত আমি অস্থির ছিলাম।
বইটির প্রতিটি অধ্যায়ে ক্রিস্টিয়ান জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ধর্মীয় নির্দেশনার অসাধারণ প্রকাশভঙ্গী ঘটেছে।  মাদারের কথাগুলো খুবই শাণিত ও প্রভাব বিস্তারকারী। প্রকৃতপক্ষে, আমার পঠিত বইয়ের মধ্যে এই বই সবচেয়ে বেশি উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। যদি তার কথাগুলো অবিশ্বাসযোগ্য কোনো ঘটনা দ্বারা আশ্রিত হয় তাহলে বিশ্বাসের গভীরে যাওয়ার দরকার নেই।  এরপর আর কি বলা যায় তা আমার জানা নেই।

মূল আলোচ্য বিষয়:
বিশ্বাস হলো যার উপর আমরা আস্থা রাখি তা নয়।  বরং আমরা যেভাবে জীবনযাপন করি, আমরা কে — তাই হলো বিশ্বাস।  একজন খ্রিস্টান হওয়া মানে হলো ক্রিস্টের মতো হওয়া।  বিশ্বজগতে ক্রিস্টের হাত-পা হিসেবে নিজেকে পরিচালিত করা। পৃথিবীতে বসবাসের উদ্দেশ্য হলো সৃষ্টিকর্তার মতোই অন্যকে ভালোবাসতে শেখা।  “এর চেয়ে মহৎ” অন্য কোনো কিছু নেই।  বন্ধুর জন্য নিজের জীবন আত্মত্যাগ করা।

ডাইনামিক ক্যাথোলিক৯. দ্য ফোর সাইন অব এ ডাইনামিক ক্যাথোলিক (The Four Signs of a Dynamic Catholic)

ম্যাথিও ক্যালী

ম্যাথিও ক্যালী একজন অনুপ্রেরণাদায়ক লেখক ও সুবক্তা।  তিনি একমাত্র লেখক, যার নাম আমার বইয়ের তালিকায় দ্বিতীবার এসেছে।
আলোচ্য বইটি কেবল ক্যাথোলিকের পরিচয় নিয়ে রচিত নয়।  বরং একটি গতিশীল ক্যাথোলিক কেমন হবে— তার চিত্রও এখানে তুলে ধরা হয়েছে। দেশব্যাপী তিনি নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করেছেন। যেমন- গড়পরতা রবিবারে গির্জায় আগমনকারীদের থেকে একটি গতিশীল ক্যাথোলিক কিভাবে তাদেরকে আলাদা করে?  এই প্রশ্নের উত্তর আপনাকে বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করা বা আপনার বিশ্বাসে আরো সুদৃঢ় হওয়া, অথবা অন্য কাউকে গতিশীল ক্যাথোলিকে ধর্মান্তরিত করতে অনুপ্রাণিত করতে সাহায্য করবে।

মূল আলোচ্য বিষয়:
ক্যাথোলিক গির্জাগুলো ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছে যার জাগরণের প্রয়োজন রয়েছে।  যদি এদেশের ৭ শতাংশ গতিশীল ক্যাথোলিক প্রতি বছর কেবল ১ শতাংশ ক্যাথোলিকদের বিশ্বাস অটল ও স্বতঃস্ফূর্ত রাখতে অনুপ্রাণিত করে তাহলে পৃথিবীর অবস্থা একরকম থাকবে না।

রেডিসকভার ক্যাথোলিসিজম১০. রেডিসকভার ক্যাথোলিসিজম (Rediscover Catholicism)

ম্যাথিও ক্যালি

ক্যাথোলিক হওয়ার পর আমি বইটি অল্প সময়ে পড়ে ফেলি।  আমার বিশ্বাসের উপর বইটির গভীর প্রভাব ছিলো।  বইটিতে মূলত ক্যাথোলিক হওয়া মানে কি এবং কিভাবে ক্যাাথোলিক বিশ্বাস ধরে রাখবেন– এবিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।  বইটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি ধর্মতাত্ত্বিক বা দার্শনিক ব্যাখ্যা দিয়ে আপনাকে দ্বিধায় ফেলে দিবে না।  তাছাড়া বিষয়গুলো আপনি সহজে বুঝতে পারবেন।  বইটি খুবই সাবলীল ভাষায় লিখিত।  সত্যিকার অর্থে, আমার পক্ষে বইটি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব ছিলো না।

মূল আলোচ্য বিষয়:
এই বই পড়ে আমার অর্জিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাটি হলো আমাদের সকলকে যাজক হওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। সৃষ্টিকর্তার মহত্ত্ব অর্জনের মধ্যদিয়ে নিজেকে সর্বোৎকৃষ্ট করে তোলার দিকটি এখানে ক্যালী তুলে ধরেছেন।

ফিকশন

দ্য গ্রেট ডিভোর্স১১. দ্য গ্রেট ডিভোর্স (The Great Divorce)

সি. এস. লুইস

লুইস বিশ শতকের অন্যতম একজন মহান লেখক ও ধর্মতাত্ত্বিক।  এই বইয়ের তালিকায় কেবল তারই দুইটি বই আলোচিত হয়েছে!
এই ছোট্ট বইটি এক ডজনের বেশি সংখ্যকবার পড়েছি। প্রতিবারই এক্ষেত্রে মৃত্যু সম্পর্কে আমার মনে নতুন অন্তর্দৃষ্টি ও বোধের উদ্রেক করেছে।  বইটি আলোচ্য বিষয় হলো স্বর্গের পথে কাল্পনিক যাত্রা।  এতে লেখকের উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রজ্ঞার দারুণ মিশ্রণ ঘটেছে।  এজন্য লেখক খুবই প্রশংসিত।

মূল আলোচ্য বিষয়:
স্বর্গ ও নরক বাস্তব বিষয়।  এ দুটি বিষয় সম্পর্কে আমরা কল্পনা ছাড়া কিছুই করতে পারি না।  আর একবার আমরা এর কোনোটি নির্বাচন করলে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে আমাদের চিরকাল কাটাতে চাইবো। এরপর আমাদের সকল কিছুর মধ্যে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।  এমনকি আত্মার মধ্যে সবচেয়ে নগণ্য দাগও তখন কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে বাঁধা বলে মনে হবে।

ফিকশন বিষয়ক সকল বই পেতে ক্লিক করুন

লর্ড অব দ্যা ওয়ার্ল্ড১২. লর্ড অব দ্যা ওয়ার্ল্ড (Lord of the World)

রুবার্ট হুগ

দীর্ঘ সময় ধরে আমি কোনো ফিকশন পড়িনি।  সৃষ্টিকর্তা ও বেনসনকে বইটি হাতে পাওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। প্রকৃতপক্ষে, বইটি আমার সঙ্গে নন-ফিকশন, ফিকশন ও গল্পের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করে দিয়েছে।  সৃষ্টিকর্তার উপর মানুষ বিশ্বাস হারিয়ে ফেললে বিশ্বে কি ঘটে তা নিয়ে বইটি রচিত।  এটি খুবই শক্তিশালী এবং বইটিতে বিচিত্র বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে।  এটি খুবই প্রভাবশালী একটি বই।

মূল আলোচ্য বিষয়:
অনেকে মনে করেন যে, আমাদের বিশ্বাস নিজেদের মধ্যে আবদ্ধ রাখা উচিত।  বিশ্বাস ব্যক্তিগত বিষয় হওয়া সত্ত্বেও কেন ব্যক্তিগত পর্যায়ে আবদ্ধ ও গোপন করা যায় না— বইটিতে এবিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।  এছাড়া বইটি পড়ে স্বর্গসুখের অনুভূতি পাওয়া যায়।  ‘নির্বাসিত জীবনই আশীর্বাদপুষ্ট’।

Tashmin Nur

Tashmin Nur

লিখতে ভালোবাসি, কারণ- আমি উড়তে ভালোবাসি। একমাত্র লিখতে গেলেই আসমানে পাখা মেলা যায়। আমার জন্ম কোথায়, পূর্ণ নাম কী, কোথায় কিসে পড়াশোনা করেছি, এটুকু আমার পরিচয় নয়। যেটুকু আমাকে দেখা যায় না, সেটুকুই আমার পরিচয়। বাকিটুকু আমার চিন্তায় ও সৃষ্টিকর্মে।

সম্পর্কিত ব্লগগুলো পড়ুন

Rokomari-blog-Logo.png
Join our mailing list and get the latest updates
Loading