রেডিয়াম বালিকাদের বীভৎস জীবনের ইতিহাস কি আপনি জানেন?

rediam balikader jibon itihas

ইতিহাসের পাতা ঘটন-অঘটনে পরিপূর্ণ, যা কখনো কখনো আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়, মানবতার প্রদর্শনী করে চলমান অনেক কিছুকেই ঢেকে রাখা যায়। আমাদের মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে, এমন বস্তু ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর আনাচে-কানাচে। মাঝে মাঝে তা লুকিয়ে থাকে কোনো কোনো সুন্দরের মাঝেও। প্রমাণ চান? জানুন রেডিয়াম বালিকাদের জীবন সম্পর্কে।

হ্যাঁ, রেডিয়াম। দ্য রয়্যাল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রি আজ বলছে, রেডিয়ামের শুধুমাত্র একটি ব্যবহারই উপযুক্ত—ক্যান্সার কোষ ধ্বংসের চিকিৎসায়। কেননা, কোষ ধ্বংসের ক্ষেত্রে এর জুড়ি এখনো পর্যন্ত মেলেনি। ১৮৮৯ সালে কুরি দম্পতি (মেরি কুরি এবং পিয়েরে কুরি) কর্তৃক রেডিয়াম আবিষ্কৃত হয়। জ্বলজ্বল করে, কী চমৎকার একটা জিনিস! অথচ তা মৃত্যুদূতও। রেডিয়াম বালিকারাও কেবল এর চমৎকারিত্বই দেখেছিল। আসলে, তাদের তেমনভাবেই দেখানো হয়েছিল।

রেডিয়াম বালিকাদের সংহতি ভেঙে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এটা ছিল লোভনীয় এক চাকরি

রেডিয়ামের জ্বলে থাকার বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগাতে উদ্যোক্তাদের খুব বেশি সময় লাগেনি। রেডিয়াম আবিষ্কারের অল্প কয়েক বছর পর উইলিয়াম জে হ্যামার নামের একজন জিংক সালফাইডের সাথে রেডিয়ামকে মিশিয়ে তৈরি করেন এক ধরনের পেইন্ট। এই আবিষ্কার তিনি পেটেন্ট না করলেও তা করে ফেলে ‘টিফানি এ্যান্ড কোম্পানি’। ওক রিজ এ্যাসোসিয়েটেড উইনিভার্সিটির মতে, “প্রথমে এটা ইওরোপে তুমুল জনপ্রিয় হয়েছিল। যারা রেডিয়াম নিয়ে কাজ করত, রাতের বেলা রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় জ্বলজ্বল করত তারা।“

১৯২১ সালের দিকে পেটেন্ট করা কোম্পানিটি নাম বদলে ‘ইউনাইটেড স্টেটস রেডিয়াম কর্পোরেশন’ হয়ে যায় এবং ‘আনডার্ক’ নাম দিয়ে রেডিয়াম বেইজড পেইন্ট উৎপাদন করতে শুরু করে। কাছাকাছি সময়ে আরও কিছু কোম্পানি কাজ শুরু করে এই পেইন্টের, যেমন- লুনা, মার্ভেলাইট ইত্যাদি নাম দিয়ে।

তারা যে শুধু পেইন্ট উৎপাদন করছিল তা নয়, পাশাপাশি পেইন্টিংও করত। NPR এর মতে, ইউএস রেডিয়াম অল্পবয়সী তরুণী এবং অনেক মহিলাকে চাকরি দিত রেডিয়াম বেইজড পেইন্ট দিয়ে ঘড়ির ডায়াল আঁকার জন্য। ১০-১১ বছরের মেয়ে শিশুরাও থাকত তালিকায়, যেন এই পেইন্ট নিয়ে কাজ করা তেমন খারাপ কিছু না। মাঝে মাঝে তাদেরকে তুলি ঠোঁটে ধরেও আঁকতে হত। কারণ- ঠোঁটে তুলি ধরে ঘোরালে সবচে’ আকর্ষণীয় ব্রাশ স্ট্রোক পাওয়া যেত। এভাবে প্রতিবারই রেডিয়াম উদরে যেত তাদের।

 অনেক মেয়েই রেডিয়াম রঙ দিয়ে নিজেদের রাঙাতে পছন্দ করত

রেডিয়াম নিয়ে কাজ করার সময় কর্মক্ষেত্রে কোনো সতর্কতাসূত্র ছিল না। এ্যাটমিক হেরিটেইজ ফাউন্ডেশনের মতে, ইউএস রেডিয়াম এমনকি নিজেদের ব্যবসার জন্য মিলিটারি সংযোগকেও কাজে লাগিয়েছিল তাদের ঘড়ি এবং যন্ত্রাংশ রেডিয়ামে রাঙানোর জন্য। তার মানে, মেয়েদের জন্যে আরও কাজ। তারা জনমনে বিরাট কাজ করছে এমন একটা ধারনা তৈরি করেছিল। অথচ তা আদৌ কল্যাণকর ছিল না। সেইসব কর্মীরাও সেসব জানত না। বরং তাদের কাছে তা একটা আনন্দময় এবং অক্ষতিকর কাজ হিশেবে উপস্থাপন করা হত। তাই মাঝে মাঝে তারাও মজা করে রেডিয়াম পেইন্ট দিয়ে নিজেদের রাঙাত। তারা নখ আর দাত রাঙাত। কে না অন্ধকারে জ্বলতে ভালোবাসে? অনেক পরে, যখন হার্ভার্ড সাইকোলজিস্ট সেসিল ড্রিংকার একটা স্টাডি করেন কী পরিমাণ রেডিয়াম এইসব মেয়ে নিজেদের মধ্যে নিয়ে নিয়েছে, তিনি ভয়াবহ ফলাফল আবিষ্কার করেন। কর্মক্ষেত্রে সর্বত্রই রেডিয়াম ডাস্ট ছড়িয়ে থাকত। ফলে, তারা আপাদমস্তকই জ্বলত। এই রেডিয়াম ডাস্ট শুধুমাত্র তাদের হাতে আর মুখে নয়, তাদের কাপড়-চোপড়, অন্তর্বাসেও ছড়িয়ে পড়ত, এমনকি পোশাকের নিচের চামড়ায়ও। এবং তারপরও, তাদের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল যে, তারা নিরাপদ।

স্বাস্থ্য-বটিকা হিশেবে রেডিয়ামযুক্ত নানান বস্তু বিক্রি হত !

একটা দুর্নীতিবাজ কোম্পানি নিজেদের ব্যবসায় সফলতার জন্য তাদের কর্মীদের কাছে রেডিয়ামকে নিরাপদ হিশেবে উপস্থাপন করছে, ব্যাপারটা প্রথম দিকে শুধু এতে সীমাবদ্ধ থাকেনি। কিছু মানুষ রেডিয়ামকে সুপার হেলথি হিশেবে প্রচার করতে শুরু করল। অনেকটা সকল রোগের নিরাময় করতে পারে টাইপ ব্যাপার বিশ্বাস করতে শুরু করল মানুষ। ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে যদি সক্ষম হয় রেডিয়াম, তাহলে অন্যান্য রোগ তো তার কাছে নস্যি! ফলশ্রুতিতে, অনেক স্বাস্থ্যরক্ষার জিনিসেও রেডিয়াম ব্যবহৃত হতে লাগল! টুথপেস্ট থেকে শুরু করে টাক, পাগলামো, এমনকি বন্ধ্যাত্ব সারানোর মহৌষধ হিশেবে রেডিয়াম দেয়া ওষুধ বিক্রি করতে শুরু করল হাতুড়ে চিকিৎসকরা। এর ফলাফল কী, তা আপনারা জানেন।

এটা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯০৪ সালে। এলডি গার্ডনার নামের একজন ‘লিকুইড সানশাইন’ নামে একটা ‘স্বাস্থ্যপ্রদ-পানীয়’(?)বাজারজাত করলেন। মানুষ এই পানি কিনে পান করতে লাগল, রেডিয়াম টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মাজতে লাগল, রেডিয়াম কসমেটিক্স ব্যবহার করতে শুরু করল। রেডিয়ামের দামও এবার গেল বেড়ে। ১৯১৫ সাল নাগাদ ১ গ্রাম রেডিয়ামের যা দাম হয়েছিল, আজকের হিশেবে তা ১.৯ মিলিয়ন ডলার দাঁড়াবে। ভোক্তাদের জন্য সৌভাগ্যের হলো, এতে করে বেশিরভাগ রেডিয়াম দ্রব্যই আসতে লাগল নকল।

রেডিয়াম বালিকাদের অসুস্থতা ধীরে শুরু হয়েছিল

  

রেডিয়াম বালিকারা অসুস্থ হলেও খুব ধীরে হয়েছিল। আজ আমরা জানি, কী ঘটছিল তাদের দেহের ভেতরে। ক্যালসিয়াম ঠিক এভাবেই কাজ করে। নতুন ক্যালসিয়াম দিয়ে পুরনো ক্যালসিয়াম পুনর্স্থাপিত হয়ে হাঁড় শক্ত হয়। যখন প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, পর্যাপ্ত পরিমাণে আবার শরীর তা পায় না, হাঁড় ভাঙতে এবং ক্ষয় হতে শুরু করে। এ্যাটমিক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের মতে, মানুষের শরীর রেডিয়াম আর ক্যালসিয়ামের পার্থক্য বোঝার ব্যাপারে অত পাকা নয়। ক্যালসিয়াম যেমনভাবে হাঁড়ে শোষিত হয়, রেডিয়ামও সেভাবেই হয়। এভাবেই শুরু হয় পঁচন।

লেখক এবং ঐতিহাসিক কেট মুর রেডিয়াম বালিকাদের কেইস ডকুমেন্টেড করেন। তিনি জানান, তাদের প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছিল কারো কারো দাঁত থেকে। একের পর এক তাদের দাঁত ক্ষয়ে যেতে এবং পঁচে যেতে লাগল। আক্রান্ত দাঁত তুলে ফেলার পর মাড়ি সুস্থ হলো না। ডেন্টিস্টের হাতের ছোঁয়ায় চোয়াল আলাদা হয়ে যেত। বাজে দুর্গন্ধ ছিল সাধারণ লক্ষণ। চামড়া এত সংবেদনশীল হয়ে গেল যে সামান্য আঘাতেও ক্ষত হয়ে যেত। কারো কারো আলসারের সমস্যা দেখা দিল। গর্ভবতীরা মৃত সন্তানের জন্ম দিল। কারো কারো মধ্যে দেখা দিল দীর্ঘস্থায়ী অবসাদ। এই রেডিয়াম বালিকাদের মৃত্যু হয়েছিল নির্মম ব্যথা আর বেদনার মধ্য দিয়ে।

কোম্পানিগুলো সত্য ধামাচাপা দিতে মরিয়া ছিল

রেডিয়াম বালিকাদের এই ভয়াবহ অসুস্থতার কারণ ঢাকতে কোম্পানিগুলো উঠে পড়ে লাগল। এই বলিদানের প্রথম শিকার মার্গারেট লুনি। মাত্র ২৪ বছর বয়সে কোম্পানির হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছিল। মৃত্যুর পর তার পরিবারকে জানানো হয়েছিল, তাকে ডিপথেরিয়ার কারণে কোয়ারেন্টাইন্ড করা হয়েছে। ছয় বছর লেগেছিল তার মৃত্যু ত্বরান্বিত হতে। লুনির পরিবার এসব গাল-গপপো বিশ্বাস করেনি। কেননা- লুনির মৃতদেহের কাছে তাদের যেতে দেয়া হয়নি, দেয়া হয়নি দেখতেও। ময়নাদন্ত করেছিল যে ডাক্তার, তিনিও বিবৃতি দিয়েছিলেন, মৃত্যুকালে লুনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিল, আর রেডিয়ামের অংশটা একেবারেই এড়িয়ে যান তিনি।

ক্ষতিপূরণের জন্য সংগ্রাম

১৯২০ সালের দিকে মামলা-মকদ্দমা শুরু হলেও, তাদের কেইস লড়ার জন্য এ্যাটর্নি খুঁজে পাওয়াও ছিল দুষ্কর। কিন্তু কেন? ১৯২৭ সালে পাঁচ জন পেইন্টার উইএস রেডিয়ামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তাদের বলা হয়েছিল, কোম্পানির সীমাবদ্ধতা বিধি অনুযায়ী, অভিযোগ করার ২ বছর তারা পার করে ফেলেছে। ১৯২৮ সালের আগে তারা তা যাচাইও করে দেখেনি। দিনের পর দিন সংবাদপত্রগুলো এই নিয়ে প্রতিবেদন করে গেল। তাদের কেউ কেউ আদালতের বাইরে আপোষ-সমঝোতায় রাজি হয়ে গেলেন। ১৯৩৫ সালে রেডিয়াম ডায়াল কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করলেও তাদের একই অবস্থার মুখোমুখি হতে হলো। এবার মামলাকারীরা আর আপোষে যেতে রাজী হলেন না৷ আদালতে মামলার শুনানি হতে আরও দু’বছর লেগে গেল। এরই মধ্যে মামলার অন্যতম বাদী ক্যাথেরিন উলফ প্রচন্ড রকম অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তিনি হাসপাতালের বিছানা থেকে তাঁর বক্তব্য দিলেন আর পত্রিকাগুলো তা ফলাও করে প্রচার করল। মামলাটি তারা জিতল বটে, কিন্তু রেডিয়াম ডায়াল কোম্পানি আপিল করে বসল। রেডিয়াম ডায়ালের প্রথম আপিল আদালতে উপেক্ষিত হয়েছিল, এতটুকুই দেখে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল ক্যাথেরিনের।

এ্যাটমিক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের মতে, এই রেডিয়াম বালিকাদের অবস্থা হয়েছিল হৃদয় বিদারক। হাসপাতালের অকল্পনীয় বিল শোধ করা তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব ছিল৷ কখনো কখনো এসব বিল শোধ করা গেলেও, তাদের ব্যথা-বেদনা আর ভোগান্তির জন্য কিছুই পায়নি তারা৷ এমনকি কেউ কেউ বাৎসরিক ভাতা পেলেও খুব বেশি তা ছিল না। কেউ কেউ সেই ভাতা পাওয়া পর্যন্ত বেঁচেও ছিলেন না৷

বেঁচে যাওয়া রেডিয়াম বালিকারাও নানা শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন

রেডিয়াম বালিকাদের সকলেই যে অল্প বয়সে মারা গিয়েছিলেন, তা নয়। যে অল্প কিছু সংখ্যক কর্মী টিকে গিয়েছিলেন, তারাও নানা শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। মি কেইন নামের একজন মারা যান ১৯১৪ সালে, ১০৭ বছর বয়সে। NPR-এর মতে, তিনি একেবারে শেষ দিকের কর্মী। ১৯২৪ সালে তিনি ডায়াল পেইন্টার হিশেবে কাজে যোগ দেন। সৌভাগ্যের বিষয় হলো, কাজটা তার খুব একটা পছন্দ হয়নি। রেডিয়ামের গন্ধ তাকে বিরক্ত করেছিল। ফলে, অল্প কিছু সময় পরে তিনি কাজে ইস্তফা দেন।

কিন্তু সারাজীবন ধরেই তিনি নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগেছিলেন। দাঁতের সমস্যা এবং মাইগ্রেন ছিল অন্যতম সমস্যা।

 রেডিয়াম ডায়াল কোম্পানি থেকে লুমিনাস প্রসেস

এক সময় রেডিয়াম ডায়াল কোম্পানি আদালতে আপিল করা বন্ধ করে। ১৯৩৪ সালে প্রেসিডেন্ট জোসেফ কেলিকে কোম্পানি থেকে বের করে দেয়া হয়। রেডিয়াম ডায়ালের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কেলি এখানেই থামেনি। রেডিয়াম ডায়ালকে লুমিনাস প্রসেস নাম দিয়ে সে পুনরায় রেডিয়াম পেইন্টিং-এর ব্যবসায় ফিরে আসে। ভালো বেতনের কারণে তখনো আগের কোম্পানির কিছু ঝরে পড়া কর্মী যোদ দেয় তার নতুন ব্যবসায়। দীর্ঘদিন ধরে চলেছিল তার এই ব্যবসা। শুধুমাত্র ১৯৭৬ সালে এসে নিউক্লিয়ার রেগুলেটরি কমিশন তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করে উচ্চ মাত্রার তেজস্ক্রিয়তার মধ্য দিয়ে কর্মীদের কাজ করানোর অভিযোগে। এটা ছিল নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে প্রায় ১৬৬৬ গুণ বেশি! লুমিনাস প্রসেস ১৯৮০ সাল পর্যন্ত মামলা চালিয়ে যায়। একসময় মামলার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেয়ে গেলে লুমিনাস বন্ধ হয়ে যায়।

এ্যাটমিক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের মতে, ডায়াল পেইন্টারদের করা মামলায় ভালোর মধ্যে একটি ভালোই হয়েছিল৷ তা হলো- পরবর্তী কোম্পানিগুলো কর্মীদের জন্য সেফটি রুলস এবং গাইডলাইন জারি করেছিল। আরেকটি লাভ হয়েছিল যে, পেশাগত কারণে অসুস্থ হলে তার জন্যে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নিয়ম চালু হয়েছিল।

 রেডিয়াম বালিকাদের কবর দিতে হয়েছিল লেডলাইন্ড কফিনে

এইসব কর্মী যে শুধু অসুস্থ ছিল তাই নয়, তারা প্রকৃতপক্ষেই খুব তেজষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল৷ ১৯২৭ সালে মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণের স্বার্থে মলি ম্যাগি নামের একজনের দেহ উত্তোলন করা হয়েছিল কবর থেকে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, তার হাড় তখনও জ্বলজ্বল করছিল। বিস্ময়ের কিছু নেই এতে। রেডিয়ামের অর্ধ জীবনই হলো অন্তত ১৬০০ বছর। কাজেই, শীঘ্রই এইসব মৃতদেহের তেজস্ক্রিয়তা হারানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। ফলে তাদের কবর দিতে হয়েছিল লেড লাইন্ড কফিনে।

দ্য লস এ্যাঞ্জেলেস টাইমের দেয়া তথ্যানুযায়ী এবং ১৯৮৭ সালে নির্মিত ডকুমেন্টারি ‘রেডিয়াম সিটি’ থেকে জানা যায়, ১৯৩০ সাল নাগাদ Ottawa ছিল ‘ডেথ সিটি’ নামে পরিচিত শহর। Ottawa’র অনেক স্থান এখনো ভয়াবহ তেজস্ক্রিয়, যা রেডিয়াম বালিকাদের মর্মান্তিক জীবনের সাক্ষী হয়ে আছে আজও।

ছবি- grunge.com

ইতিহাস সম্পর্কিত আরোও বই দেখতে…………।  

 

তথ্যসূত্র-

https://www.grunge.com/181092/the-messed-up-truth-about-the-radium-girls/

https://www.buzzfeed.com/authorkatemoore/the-light-that-does-not-lie

https://www.wired.com/2011/03/the-radium-girls/

https://edition.cnn.com/style/article/radium-girls-radioactive-paint/index.html

https://www.npr.org/2014/12/28/373510029/saved-by-a-bad-taste-one-of-the-last-radium-girls-dies-at-107

https://www.theatlantic.com/science/archive/2017/03/radium-girls-kate-moore/515685/

Tashmin Nur

Tashmin Nur

লিখতে ভালোবাসি, কারণ- আমি উড়তে ভালোবাসি। একমাত্র লিখতে গেলেই আসমানে পাখা মেলা যায়। আমার জন্ম কোথায়, পূর্ণ নাম কী, কোথায় কিসে পড়াশোনা করেছি, এটুকু আমার পরিচয় নয়। যেটুকু আমাকে দেখা যায় না, সেটুকুই আমার পরিচয়। বাকিটুকু আমার চিন্তায় ও সৃষ্টিকর্মে।

2 thoughts on “রেডিয়াম বালিকাদের বীভৎস জীবনের ইতিহাস কি আপনি জানেন?”

  1. রেডিয়ামের অর্ধ জীবনই হলো অন্তত ১৬০০ বছর। কাজেই, শীঘ্রই এইসব মৃতদেহের তেজস্ক্রিয়তা হারানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। ফলে তাদের কবর দিতে হয়েছিল লেড লাইন্ড কফিনে।
    🙁

Leave a Comment

সম্পর্কিত ব্লগগুলো পড়ুন

Rokomari-blog-Logo.png
Join our mailing list and get the latest updates
Loading